শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কিডনি নষ্ট, ক্যান্সার বা মারাত্মক জটিলরোগে আক্রান্ত হতে পারে এমন কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, পুডিং ও ফিন্নি। আর বগুড়া থেকে দই এনে তা অবৈধভাবে বিএসটিআই’র লোগো লাগিয়ে বসানো হয় নিজেদের মতো করে তারিখ। আর এসব পণ্য সরবরাহ করা হতো কক্সবাজারের নামী-দামি ৩০টির বেশি রেস্তোঁরায়।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের ‘শৈবাল ফুড প্রোডাক্টস’ প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযানে বেরিয়ে আসে এই মারাত্মক চিত্র।
বগুড়ার দই, মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, ফিন্নি বা পুডিং; রেস্তোঁরায় দুপুর কিংবা রাতের খাবারের পরপরই এসব মুখরোচক খাবারের স্বাদ নেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা। কিন্তু কেউ জানে না কিভাবে মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, ফিন্নি বা পুডিং তৈরি হচ্ছে।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের সুগন্ধা পয়েন্টের অন্ধকার গলির ভেতরে ‘শৈবাল ফুড প্রোডাক্টস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার সদর উপজেলা ও পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক জহর লাল পাল বলেন, শৈবাল ফুড প্রোডাক্টস কারখানায় নোংরা পরিবেশে মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, ফিন্নি বা পুডিং তৈরি হচ্ছে। আর এসব তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মারাত্মক কেমিক্যাল। একই সঙ্গে বগুড়া থেকে আনা দইে অবৈধভাবে লাগানো হচ্ছে বিএসটিআই’র লোগো। নিজেদের মতো করে লাগানো হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আসিফ বিন ইকরাম বলেন, শৈবাল ফুড প্রোডাক্টস প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, ফিন্নি, পুডিং এবং বগুড়া থেকে আনা দই সরবরাহ হয়ে থাকে কক্সবাজারের নামি-দামী ৩০টির বেশি রেস্তোঁরায়। অভিযানে বেরিয়ে আসে কিডনি নষ্ট, ক্যান্সার বা মারাত্মক জটিলরোগে আক্রান্ত হতে পারে এমন কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি দই, কাস্টার্ড, পুডিং ও ফিন্নি। এসব অভিযোগের দায়ও স্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারি আমির হোসেন। তাই এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারি আমির হোসেনকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি নগদ ৪ লাখ টাকা জরিমানা পরিশোধ করায় অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং সবকিছু সংশোধন করে প্রশাসন থেকে অনুমোদন নিয়ে পণ্য তৈরি করার নির্দেশ দেয়া হয়।
শৈবার ফুড প্রোডাক্টস প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারি আমির হোসেন বলেন, কক্সবাজারের ৩০টির বেশি রেস্তোঁরায় মিষ্টান্ন সরবরাহ করে থাকি। আর রেস্তোঁরাগুলোকে এসব মিষ্টান্ন রাখার জন্য ফ্রিজও দিয়ে থাকি।
আর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং অফিসার মো: আসলাম উদ্দিন বলেন, হোটেল-রেস্তোঁরাগুলো এড়াতে পারেনা এসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য কেনার দায়। এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চলবে। যারা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রির করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করে জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার পৌরসভা ও ৩৯ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply